রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০১:১৯ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩
উপেক্ষিত ১৪৪ ধারা: দিরাইয়ে রেকর্ডীয় জায়গার উপর জোরপূর্বক ঘর নির্মাণের অভিযোগ

উপেক্ষিত ১৪৪ ধারা: দিরাইয়ে রেকর্ডীয় জায়গার উপর জোরপূর্বক ঘর নির্মাণের অভিযোগ

amarsurma.com
উপেক্ষিত ১৪৪ ধারা: দিরাইয়ে রেকর্ডীয় জায়গার উপর জোরপূর্বক ঘর নির্মাণের অভিযোগ

মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার:
দিরাইয়ে একজনের রেকর্ডীয় মালিকানা জায়গার উপর পার্শ্ববর্তী বাড়ির লোকজন জোরপূর্বক ঘর তোলার অভিযোগে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দিরাই উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের মাটিয়াপুর গ্রামের মৃত আতিকুর রহমান চৌধুরীর ছেলে মোঃ বদরুজ্জামান চৌধুরী বাদী হয়ে গত ১৫ মার্চ একটি মামলা দায়ের করেন। যা বিবিধ মামলা নং-২৯৫/২০২৩ ইং। মামলায় একই গ্রামের রহিম উল্লার ছেলে বর্তমান মেম্বার মোঃ আজিজুর রহমান, তার ভাই জিয়াউর রহমান, সৈয়দুর রহমান, আজিজুর রহমানের ছেলে জাকের মিয়া, মৃত আরব উল্লাহর ছেলে রহিম উল্লাকে বিবাদী করা হয়।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ১৪ মার্চ সকাল ১০টায় বাদী খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন যে, মাটিয়াপুর গ্রামের পশ্চিমে তার রেকর্ডিয় জায়গায় ঘর তোলার জন্য মাপঝোক চলছে। তাতে তিনি বাধা দিলে বিবাদীগণ তাদের জায়গায় ঘর তুলছে বলে ক্ষিপ্ত হয়ে তার উপর আক্রমণ চালায়। সূত্র মতে, বর্ণিত এসএ ১১ দাগের ০.২৮ একর ভূমির এসএ রেকর্ডীয় মালিক ও দখলদার ছিলেন আমার দাদা মৃত ইব্রাহিম উল্লা ও প্রতিমামহী মতিজান বিবি। এসএ ১১ দাগের ভূমিসহ অপরাপর ভূমি মতিজান বিবিগং নামে এসএ ২৬৬ খতিয়ানে রেকর্ড হয়। এসএ ১১ দাগের ০.০৬ একর ভূমিতে আমার পিতা আতিকুর রহমান উত্তরাধিকারী সূত্রে মালিক ও দখলদার থাকাবস্থায় রেকর্ডীয় বিগত আরএস রেকর্ডে এসএ ১১ দাগের ০.০৬ একর ভূমি আরএস ২৭২ দাগে বাড়ি হিসেবে আতিকুর রহমানের নামে মাটিয়াপুর মৌজার আরএস ৫৮ খতিয়ানে রেকর্ড হয়।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, বিবাদীগণ আমার মৌখিক নিষেধ অমান্য করায় গত ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কাজ বন্ধ ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে একটি মামলা দায়ের করি। এরপর মামলাটি তদন্তের জন্য দিরাই থানায় প্রেরণ করলে এএসআই মোঃ মহিবুর রহমানকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। যার বিবিধ মোকদ্দমা নং-২৯৫/২৩, স্মারক নং-৬২০, তারিখ ঃ ১৫/০৩/২০২৩ ইংরেজি। এএসআই মহিবুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি নোটিশে উভয়পক্ষকেই মামলাটি বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তপশীল বর্ণিত ভূমি মাটিয়াপুর মৌজার জেএল নং-১০০, আরএস খতিয়ান নং-৫৮, দাগ নং-২৭২-এর ০.০৬ একর বাড়ি রকম ভূমিতে শান্তি ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য বলা হয়। বাদী উল্লেখ করেন, আদালাতের নির্দেশ অমান্য করে কখনও দিনে আবার কখনও রাতে তারা ঘরের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা বাধা দিতে গেলে বিবাদীগণ আমাদের উপর বিভিন্নভাবে আক্রমণ করতে উদ্যত হয়। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে একটি সাধারণ ডায়েরিও করেন বলে জানান বদরুজ্জামান। জিডি নং-৭১৮, তারিখ ঃ ১৪/০৩/২০২৩ ইংরেজি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করেন দিরাই থানার এসআই মাহবুব ছিদ্দিকী। তিনি তার দীর্ঘ তদন্তের শেষে উল্লেখ করেন, বাদীর তফসিল বর্ণিত জায়গার দখলকে কেন্দ্র করে বিবাদীদের দ্বারা যে কোন সময় বাদী ও তার পরিবারের লোকজনের জানমালের ক্ষতি সাধন হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা বিদ্যমান মর্মে তদন্তে প্রকাশ পায়। প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণে এবং ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় বাদীর আনিত অভিযোগ ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১০৭ ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রমাণিত হওয়ায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে দিরাই থানায় ননএফআইআর প্রসিকিউশন নং-২০/২০২৩, তারিখ ঃ ১৫-০৩-২০২৩ ধারা ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১০৭ বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করলাম।
এদিকে বাদীর মামলার পর আদালত কর্তৃক ১৪৪ ধারা জারী করার পরও আদালাতের আদেশ অমান্য করে নালিশা ভূমিতে কাজ করার অভিযোগ বাদীপক্ষের। তবে বিবাদীগণ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ায় এখন পর্যন্ত আর কোন কাজ করা হয়নি। বিবাদী বর্তমান ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ আজিজুর রহমান জানান, এটি আমাদের মৌরসী স্বত্ত্ব, এখানে মূলত ৫ খতিয়ানের জায়গা, বর্তমানে আমরা ৪ খতিয়ানের মালিক। বাদীপক্ষের খতিয়ানের ৬ শতাংশ জমিও আমাদেরকে দিয়ে দেয়া হয়েছে। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে রাতেও কোন কাজ করছেন না বলেও জানান তিনি।
বিবাদী রহিম উল্লা জানান, আমরা এখানে বাড়িঘর করে প্রায় ৭০ বছর থেকে বসবাস করছি। বর্ণিত ভূমিটি ৫ দাদার অংশ হিসেবে ২ দাগের ৪২ শতাংশ জমি অনেক আগেই তারা আমাদেরকে স্থায়ীভাবে দিয়েছেন। বাদীর এখানে কোন দখলও নেই বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে করিমপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদার সিদ্দিকুর রহমান জানান, আমি গত ১৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সরেজমিন তদন্ত করে তার রিপোর্ট আদালতে দাখিল করেছি। ১৪৪ ধারার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে দিরাই থানার এসআই মহিবুর রহমান জানান, আদালত থেকে নিষেধাজ্ঞা আসার পর থেকে আর কোন কাজ হচ্ছেনা। তবে বাদীর অভিযোগ, আদালতের নিষেধাজ্ঞা আসার পরও তারা কাজ করছে। এ সংক্রান্ত ছবি ও ভিডিও তাদের কাছে রয়েছে বলেও জানান বাদী। দিরাই উপজেলার করিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিটন চন্দ্র দাসের মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: